আত্বমানবতার সেবায় “জীবন-তরী” অসুস্থ্য মনিরের সুচিকিৎসায় সাহায্যের অনুরোধ
হাসানুজ্জামানঃ
একজন রাজমিস্ত্রি। খেটে খাওয়া মানুষ।
প্রতিদিন যার চলার পথে সঙ্গী হয় অভাব। সন্তানদের চাহিদা কখনও সে মেটাতে পারেনি। বহু চেষ্টা করা পিতা তার মনে ক্ষোভ আর দুঃখের পাহাড় জমিয়ে হঠাৎ হয়ে গেলেন অসুস্থ্য। চেরাগ আছে, তেল নেই, তেল নেইতো আলোও নেই।
এমন অভাব নিয়ে অসুস্থ্যতায় মরণের পথ তৈরী করেছেন, অসহায় পরিবারের একমাত্র আয়ের সহায়ক মনির।
ঘটনাটি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার মেহার দক্ষিন ইউনিয়নের দেবকরা গ্রামে ঘটে।
জানা যায়, ওই গ্রামের পূর্বপাড়া দুলুর বাড়ির মৃত আব্বাস আলীর কনিষ্ঠ পুত্র মোঃ মনির হোসেন (৪৫) গত ১৩ জানুয়ারী হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়লে স্ত্রী নাজমুন নাহার স্থানিয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। ওই চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। এতে কিছুটা উপশম হলেও কয়েক দিন পরই বাড়তে থাকে তার পেটের ব্যথা। নিরুপায় নাজমুন নাহার। ধার-দেনা করে নিয়ে গেলেন কুমিল্লায়। সেখানে নানান পরীক্ষায় ধরা পড়লো মনিরের খাদ্যনালী ছিদ্রি হয়েছে এবং খাদ্যনালীর অন্য এক অংশে টিউমার রয়েছে। চিকিৎসক পরামর্শ দিলেন দ্রুত অপারেশন করার। অনেক টাকার ব্যাপার। একদিকে টাকা আর অন্যদিকে স্বামী। হতাশায় ভেঙ্গে পড়লেন নাজমুন নাহার। সম্ভাব্য সকল আত্মীয় স্বজনদের কাছে হাত বাড়িয়ে অপারেশনের টাকা জোগাড় করেন তিনি। চলে যায় এরই মধ্যে লক্ষাধিক টাকা। বাড়িতে মনিরের বৃদ্ধ মা ও অবুঝ ৩ পুত্র সন্তান অনাহারে মরছে। নিজ বাড়ির লোকজন এসময় এগিয়ে এসে মা ও সন্তানদের মুখে আহার তুলেছেন। বর্তমানে মনির তার নিজ বাড়িতে পরবর্তি চিকিৎসা ও ঔষধ-পথ্যের অভাবে মরতে বসেছে।
এবিষয়ে নাজমুন নাহার (৩৪) বলেন, আমিও গরীব ঘরের মেয়ে। ছোট বেলা বাবা মারা যায়। পড়েছি আরেক গরীবের ঘরে। তবুও ভালোই চলছিলাম। আল্লার অশেষ মেহেরবানিতে আজ এমন দূরাবস্থায় আমরা দিনাতিপাত করছি। ধার-দেনায় নাক ডুবেছে। কিন্তু বর্তমানে প্রয়োজনীয় ঔষধ ও পথ্যের অভাবে স্বামীকে বাঁচানো দায়। আর পারছিনা। আমার স্বামী বাঁচলে আমি বাঁচবো আর আমি বাঁচলে আমার ৩ পুত্র বাঁচবে। সমাজে এমন যদি কেউ থাকেন, তাহলে একটু সাহায্য করেন। আমাদের বাঁচান। এত বড় সমাজে আমাদের কি ঠাঁই হবে না। বলতে বলতে তিনি কাঁন্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
মনিরের বৃদ্ধ মা ফয়জুন্নেছা (৯০) বলেন, হে দয়াবানেরা আপনারা কোথায়। আমার ছেলেকে বাঁচান। আমি মা হয়ে আর সহ্য করতে পারছিনা। আপনারা একটু সাহায্য করলে আমার ছেলেটা বাঁচবে। সবাই একটু দয়া করুন-তিনিও কেঁদে দিলেন।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন”জীবন-তরী” ফাউন্ডেশন’র নেতৃবৃন্দ অসহায় মনিরের সুচিকিৎসায় এগিয়ে এসেছে। তারা দ্বীনদার, দানবীর ব্যক্তিদের সাহায্য নিয়ে মনিরকে বাঁচাতে চায়।
জীবন-তরী সংগঠনের সভাপতি মোঃ সাহেদুল হক সুমন বলেন, এই সমাজে অনেক অসহায় মানুষ আছে। যারা কোনো না কোনো ভাবে কারও না কারও কাছ থেকে কিছু না কিছু সাহায্য পাচ্ছে। কিন্তু মনির রাজমিস্ত্রি কাজ করতো। ধার-দেনা করে একটি ঘর তৈরী করেছে। সে কারও সাহায্য পাচ্ছে না। এই অসহায় মনিরের সুচিকিৎসায় আর্থিক সাহায্য করতে দয়াবান, দানবান, সমাজ সেবকদের কাছে তিনি অনুরোধ জানান।