গিন্নি মিন্নির ফিন্নি
এবং দর্শনের ধর্ষন বা ধর্ষনের দর্শন::
নিউজ ডেক্স
কাল কেউটের ফনায় নাচছিল খিনদারের স্মৃতি, বেহুলা কখনো বিধবা হয় না এটা বাংলার রীতি।
বেহুলা হতে চেয়ে ছিলেন তিনি। পারেননি। ছলা-কলা ললনা দিয়ে চলেছেন। এক আত্মায় দুই নাগর বহন করেছেন। সিনেমার সিনেমন ঘটনাই ঘটে গেল নয়নের নয়ন। বন্ডের বন্ড ভেঙ্গে বন্ধন ছাড়া নয়ন চলে গেল অন্ধকারের প্রকোষ্টে। দুই নৌকায় পা দেওয়া সতী সাধুর অভিনয় করে যাওয়া গিন্নি মিন্নির ভালোবাসা কলঙ্কিত হল ফাঁসির দড়িতে। সুন্দরীর সৌন্দর্য, ভালোবাসার চোখ ইশারা, কলেজছাত্রীর বিদ্যা অভিনয়, নগরের নাগরকে চক্রান্ত ষড়যন্ত্রের জালে প্রকাশ্য দিবালোকে নিপাত করার কৌশলে সফল হলেন ঘরের গিন্নি মিন্নি। নয়নে নয়নে থেকে শয্যা শয়নের রিফাতকে কোপাতে কোপাতে বাঁচানোর অভিনয় একটি লাইভ অনুষ্ঠানে ধরা পড়ে গেল।
মিন্নির মত এমন চরিত্র দিয়ে কোন উপন্যাস যেন বাংলাদেশ লেখা না হয়। একঘর মেয দুঘর করা এতে উচ্চ চাহিদার নারী জনসম্মুখে নিজেকে সত্যিই সাধু স্ত্রীরূপে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলেন।
বন্ডদের সাথে বন্ধন ঠিক রেখে রিফাত কে বিয়ে করে ছলনাময় এর প্রমাণ দিলেন। নয়নের নয়ন কে ধোকা দিয়ে বিছানার ব্যক্তিকে শবদেহে রূপান্তরিত করে কুচক্রী নারী হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেওয়ার অভিনয়ে অবশেষে ধরা দিলেন জিরো জিরো সেভেন গ্রুপে সদস্য হয়ে।
যেভাবেই হোক একই ঘটনায় দুজন স্বামী কে কুপোকাত করলেন। চরিত্রের সবচেয়ে ঘৃণিত উপাখ্যান মঞ্চস্থ করলেন।
তার ফিন্নির দরবারে তৃষ্ণা মেটাতে উপস্থিত ছিলেন রিফাত ,নয়ন বন্ড সহ 007 বন্ড। কি দুর্লভ দুর্ভেদ্য অজেয় ছিল প্রণোদনা। কি পরিমান অসহায় হইলে এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে একই গিন্নিকে মাঝে রেখে রক্তের ফিন্নি দিয়ে হোলি খেলে সমস্ত দেশের মানুষকে স্তব্ধ করে দেয়।
অবশেষে পৃথিবী তার অস্তিত্ব টিকাতে নির্মম নিয়তি বাস্তবতায় হয়েছে রক্ষা, ফাঁসির আদেশের মাধ্যমে। রূপবতী মিন্নির জন্ম যেন আর না হয় কখনো বখাটে নয়নদের জন্য। স্বর্ণময়ী মিন্নির দৃষ্টি যেন না হয় রিফাত ফরাজী মত প্রেমিকদের জন্য।
এক গিন্নির ফাঁসির মধ্য দিয়ে যদি হাজারো পতি রক্ষা করা যায় তাহলে কুল রক্ষা,তবে যাত্রা নাস্তি!
এ ধরনের দর্শন চলতে থাকলে ,সে পুস্তকের ছাত্র কোথায় থাকবে। জ্ঞানের আলোর মশাল জ্বেলে বিদ্যালয় ধর্ষণের দর্শনালয় করে বীরবলে বীরবাহু জানান দিল সিলেটে। মুরারিচাঁদ এর নাম দিয়ে করা সিলেট এর শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলঙ্কিত হইল অবৈধ জোরপূর্বক যৌন মিলনে। দিক্কার শত ধিক। 360 আউলিয়ার পূণ্যভূমি প্রায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান তারাই তীর্য হারিয়ে ফেলল ছয় জন যৌনবীরের কাছে।
এমসি কলেজের প্রতিটি বর্গ ইঞ্চি যদি শত শত বার বৃষ্টির পানিতে পরিষ্কার করা হয় শত বছর পরেও কি এ কলঙ্ক মুছে যাবে। একজনের বিবাহিত স্ত্রী কে লাঞ্ছিত করা জোরপূর্বক ধর্ষণ করা কি ধরনের গর্হিত কাজ তা বুঝতে কলেজে পড়া লাগেনা কলেজ চত্বরে পা দিলেই শিক্ষাগ্রহণ করা যায়। কি এমন তাদের পৌরুষত্ব যাকে পরাস্ত করতে সময় নিতে সময় লাগল সমাজের?। কোন আচরণ পশুর ,কোন আচরণ মানুষের ?তার ভিত্তি রচিত হয় শৈশবে, কৈশোরে ,যৌবনে। কিন্তু সাইফুর, অর্জুন দের অর্জন কতটুকু ?তাদের পুষত্ব আচরণ দেখতে হলো শত শত সুনাগরিককে।
আলোকিত বিদ্যাপীঠ, জ্ঞানালোকের জ্ঞানীদের কুকুরের মত আচরণ এর কাছে অসহায় হয়ে চোখ খুলে দেখতে হল একজন স্ত্রীর ধর্ষণ এর প্রেক্ষাপট। একজন স্বামীকে বেঁধে রেখে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে তার কাছে ফিরে পাওয়া সেটি কি ধরনের আঘাত কি ধরনের করুনা
এ গর্হিত কাজ পশুত্বের কত নিচে, তা হয়তো তারা পরিবার থেকে শিখে আসে নি। পৈশাচিক আচরণ আর কলঙ্কের ভার এবার কলঙ্কিত করল প্রতিষ্ঠানটিকে। ধর্ষণের লোভ লালসা আর সহজলভ্যতার দর্শন আমাদের দেশকে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছে। নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় আর ইঁচরে পাকাদের সমাজে মাতব্বরি নষ্ট করে দিচ্ছে সামাজিক দর্শন ও চিন্তা-চেতনাকে। একটি নারীকে ধর্ষণ করা মানেই জীবিত আত্মাকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া। এটি হত্যার চেয়েও বড় হত্যাকারীর কাজ।এ অপরাধ মিন্নির অপরাধকেও ছাড়িয়েছে।
প্রতিনিয়তই ধর্ষণের সংবাদ বের হচ্ছে। এসকল কাপুরুষ তাদের অসৎ চরিত্র চরিতার্থ করার অপচেষ্টা করে সমাজকে কলুষিত করছে। তাদের মত অপরাধীর মস্তিষ্ক বিকৃতি ও শারীরিক বিকলাঙ্গ আশু প্রয়োজন। সমাজ ধর্ম ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা কে অধরা রেখে যারা একজনের স্ত্রীকে বিবস্ত্র করতে পারে, তারা যেকোন সময় তাদের পরিবার, সমাজ, ধর্ম, বৈশিষ্ট্য, আচার-ব্যবহার রীতিনীতি, দর্শন কে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করতে পারে।।
সেই যন্ত্রণার সময় আসার আগেই তাদের আত্মার কুপ্রবৃত্তিকে নিরাত্না করা উচিত। তাদের ইদ ও এষনাকে চিতায় জ্বালিয়ে হর্ষধ্বনি করা উচিত।
মিন্নির মত বিচারের বিবেক জাগ্রত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলে ধর্ষণের দর্শন পতন হবে। আচার-ব্যবহার চিন্তা, চেতনা কে উলঙ্গ করার সাহস পাবে না কেউ। নারী আত্মার সাহসী নয়নকে পূজা করবে আজীবন। শ্রদ্ধায় মাথা নত করবে, অবলীলায় নমোনমো করবে।
মিন্নির শাস্তির মাধ্যমে কুলাঙ্গার নারী চরিত্র কে যেমন শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে তেমনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দর্শন কে মাটি দিয়ে ধর্ষণ করার শাস্তি এমন হওয়া উচিত যা দেখে নোংরা পৌরুষত্বের পরাজয় আসে অব্যক্ত রূপে।
ইমাউল হক পিপি এম