সেই সঙ্গে করেছেন রাজনীতি -অপু উকিল
এস সি এন ডেক্স
ছোটবেলায় লেখালেখির অভ্যাস ছিল। লেখিলেখির সূত্রে দৈনিক বাংলার বাণীতে পরিচয় হয় আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে। তিনিই লেখালেখির পাশাপাশি অপু উকিলকে রাজনীতিতে উৎসাহ দেন। এরপর শুরু হয় তাঁর ছাত্ররাজনীতির জীবন।
অপু উকিলের জীবনসঙ্গী আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। নবম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ছিলেন অপু।
বর্তমানে যুব মহিলা লীগ নিয়েই বেশি ভাবছেন বলে
এস সি এন অনলাইনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন তিনি। অপু উকিল বলেন, ‘জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার এগিয়ে যাওয়াই হবেই আমার পরম পাওয়া। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আওয়ামী লীগের একটি সহযোগী সংগঠনকে আমার হাত দিয়ে গড়ে তুলতে পেরেছি, তা হলো আমার বিজয়। এ সংগঠনের মাধ্যমে হাতে ধরে ধরে আমরা নেতা গড়ে তুলেছি, যাদের অতীতে কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল না।’
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোনালী চাঁদপুর নিউজ ডট কম
এস সি এন অনলাইন : শুরুতেই যুব মহিলা লীগ প্রতিষ্ঠার পটভূমি জানতে চাই।
অপু উকিল : আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে যুব মহিলা লীগ গড়েছেন। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে বিএনপি-জামায়াত জোট। নির্বাচনের রেজাল্ট দেওয়ার আগেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর ওপর হামলা করে তারা। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করে। এরপর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অবৈধভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা যেখানেই যেতেন পুলিশ তাঁদের আটক করার জন্য ওঁত পেতে থাকত। সেই সময় নেত্রী আমাদের বললেন, ‘তোমরা যারা ছাত্রলীগ করেছ তাদের মাঠে থাকা দরকার।’ তাঁর নির্দেশ পেয়েই আমরা কমিটির একটি স্ট্রাকচার দাঁড় করলাম। ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি জমা দিয়েছিলাম।
কিন্তু প্রথমদিকে আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য অনেককেই পাওয়া যায়নি। এটা বিভিন্ন কারণেই হয়েছে, সামাজিক কারণে বা বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতনের ভয়ে তারা মাঠে আসেন নাই।
২০০২ সালের ৬ জুলাই যখন এ সংগঠনটি জন্ম নিল, তখন ছিল যেন একটি সদ্য জন্ম নেওয়া শিশু। যার হাত নাই, পা নাই—কিছুই নাই। কারণ, সংগঠনের একটা কাঠামো তৈরি করাই থাকে কিন্তু যুব মহিলা লীগের কিছুই ছিল না।
এস সি এন অনলাইন : যুব মহিলা লীগের তখনকার কী কী কাজ ছিল?
অপু উকিল : বিএনপি-জামায়াতের আমলে যখন আমাদের কোনো কর্মসূচি দেওয়া হতো, তখন আমরা তা পালন করতাম। শুরু থেকেই আমাদের কর্মীসংখ্যা কম ছিল। কিন্তু এই কমসংখ্যক কর্মীও বিএনপি-জামায়াতের অত্যাচার থেকে রেহাই পায়নি। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আমরা সংগঠন গোছানোর কাজ শুরু করেছিলাম। প্রথম দিকে আমরা মোহাম্মদপুর থানায় কমিটি করেছি। কিন্তু সেখানে গিয়েও আমরা নেতাকর্মীদের সংকট দেখেছি। যারা আওয়ামী লীগ করেন তাঁরাও আমাদের বলত এটা তো কোনো সংগঠন হতে পারে না। দুর্যোগের সময় এটা কেন করছেন। সেখানে আমরা নেতাদের সহযোগিতা পাই নাই। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যাদের ভালো সম্পর্ক ছিল, তাদের এনেছি। সেখানে ভালো দক্ষ দু-তিনজন সাংগঠনিক মেয়ে এবং তাদের মাধ্যমে আরো কয়েকজন নিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করেছি। এভাবে বিভিন্ন থানার কমিটি করেছি। ওই সময়ে তারা সকল প্রকার ভয়ভীতি উপেক্ষা করে, শত অত্যাচারের মধ্যেও বিএনপির দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। সবাই মিলে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলি। এরই মধ্যে আমাদের সাংগঠনিক পরিধি বাড়তে থাকে। বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, থানা ও ওয়ার্ডের কমিটি করা হয়।
এস সি এন অনলাইন : এই সংগঠনটি যখন শুরু করেন, তখন তো আমরা জানি আপনার সন্তান একেবারে ছোট ছিল। তাকে সামলে সাংগঠনিক কাজকর্ম কীভাবে করেছেন?
অপু উকিল : সংগঠনটি যখন শুরু করি, তখন আমার ছোট সন্তানের বয়স ছিল দেড় বছর। এরপর তাকে বড় করতে আমি যত শ্রম-ঘাম ব্যয় করেছি, তার চেয়েও যুব মহিলা লীগ গড়তে আমি সময় বেশি ব্যয় করেছি। তাই এ সংগঠনের মাধ্যমে জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন এবং জননেত্রীর শেখ হাসিনার এগিয়ে যাওয়াই হবে আমার পরম পাওয়া।
জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আওয়ামী লীগের একটি সহযোগী সংগঠনকে আমার হাত দিয়ে গড়ে তুলতে পেরেছি তা হলো আমার বিজয়। এ সংগঠনের মাধ্যমে হাতে ধরে ধরে আমরা নেতা গড়ে তুলেছি, যাদের অতীতে কোনো রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল না। যাঁদের মধ্যে কেউ সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের সদস্য, উপজেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এর মাধ্যমে নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন হচ্ছে, সামাজিক স্বীকৃতিও হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী ইশতেহারও বাস্তবায়িত হচ্ছে।
দেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যার আট কোটি হলো নারী। তাদের বাদ দিয়ে মধ্যম আয়ের, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে না। কারণ উন্নত হতে হলে দেশের মানবসম্পদের উন্নয়ন করতে হবে। আট কোটি নারীর রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে হবে। নারীরা রাজনৈতিকভাবে উন্নত হলে সমাজের উন্নয়ন আরো বেশি ত্বরিৎ হবে। আর এই উন্নত করার ক্ষেত্রে যুব মহিলা লীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এর জন্য আমরা ইউনিয়ন থেকে শুরু করে ইউনিট কমিটি পর্যন্ত গড়ে তোলার কাজ করছি।
এস সি এন অনলাইন : যুব মহিলা লীগের আদর্শ ও উদ্দেশ্য কী? সে অনুযায়ী কি সংগঠন এগুচ্ছে?
অপু উকিল : নারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাদের সম-অধিকার আদায়। নারীদের জন্য যে বৈষম্য আছে তা দূর করা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছেলেসন্তানের চেয়েও মেয়েসন্তান এগিয়ে। কিন্তু এখনো সামগ্রিক চিত্রে নারীরা শিক্ষায় পিছিয়ে রয়েছে। এ কারণে মৌলবাদী শক্তিরা তাদের বিভ্রান্ত করার সুযোগ পায় বেশি। বিশেষ করে নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বাধীনতাবিরোধীরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা করে। এ জন্য তৃণমূলের সব নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান, প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নারীদের মুক্তির জন্য যেসব কাজ করছেন সেগুলো বোঝাতে হবে। তাদের সন্তানদের জন্য আগামীতে কী করবেন তাও বলতে হবে।
এস সি এন অনলাইন : এক-এগারোর সময়ে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল?
অপু উকিল : এক-এগারো সরকার আসার পর আমাদের ওপর অনেক অত্যাচার করা হয়েছিল। আমার স্বামীকে (অসীম কুমার উকিল) গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আমার নামে মামলা দেওয়া হয়েছিল। আমার বাড়িতে সাতবার অভিযান চালানো হয়। তারপরও যেদিন নেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে আমরা আদালত চত্বরে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। তাঁরা সাত মাস জেলে ছিলেন। নেত্রীকে যখন সাবজেলে আনা হলো, তখন আমরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে মুখে কাপড় বেঁধে আন্দোলন করেছি। আমাদের দেখাদেখি অন্যরাও দাঁড়িয়েছিলেন। নেত্রীর মুক্তির জন্য আমরাই প্রথম স্বাক্ষর নিয়েছিলাম এবং আমরা তা তৎকালীন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছি। এ ছাড়া আমরাই প্রথমই নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে অবরুদ্ধ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেছি। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী নিয়ে সেই সমাবেশ হয়। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত হয়েছিলেন। এটাই ছিল প্রকাশ্য কোনো সমাবেশ। এরপর সকল আন্দোলন সংগ্রামে আমরা ছিলাম।
এস সি এন অনলাইন : যুব মহিলা লীগের সম্মেলন তো হয়েছে কিন্তু এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি কেন? কবে হবে বলে আশা করছেন?
অপু উকিল : পূর্ণাঙ্গ কমিটির একটা খসড়া আমরা তৈরি করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার হাতে দিয়েছিলাম। তিনি আমাদের আরেকটু মডিফাই (পরিমার্জন) করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। খুব শিগগির আমরা কমিটি ঘোষণা করব।
এস সি এন অনলাইন : কোন বিবেচনায় কমিটি দিচ্ছেন?
অপু উকিল : যুব মহিলা লীগের প্রতিটা নেতাকর্মী সংগঠনকে নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসে। তারা মাঠে রক্ত দিয়েই সংগঠনটি তৈরি করেছে। তাই কেউ যেতে চায় না। বিভিন্ন কারণে ঝরে পড়া ছাড়া সাবেক কমিটির সদস্যদের রাখতে চেষ্টা করেছি। আর আমাদের কমিটির পদসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে কমিটিতে নতুন মুখ আসবে। তাদের মধ্যে সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এবং আমাদের ত্যাগী কর্মীরা স্থান পাবে।
এস সি এন অনলাইন : যুব মহিলা লীগ দলীয় চিন্তার বাইরে এসে সমগ্র নারীদের বিষয়ে কীভাবে কাজ করবে?
অপু উকিল : সামাজিকভাবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে নারী নির্যাতন আগে আরো বেশি হতো। কিন্তু সেটা তেমন প্রচার হতো না। কিন্তু ডিজিটাল প্রচার মাধ্যম হওয়ায় এখন মানুষ অনেক কিছুই সহজেই জানতে পারছেন। এখন প্রতিকারও পাচ্ছেন। এটি অনেক কমে যাচ্ছে। এর (নারী নির্যাতন) বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান সব সময়ই আছে। এখন আমাদের সবাই সামাজিকভাবে সচেতন হতে হবে। কারণ সচেতনতা থাকলে এ নির্যাতন বন্ধ হবে।
মাদকের কারণেই অনেক সময়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটে। নেশাগ্রস্ত হয়েই তারা পশুর মতো আচরণ করে। তাই মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে আমাদের কাজ করতে হবে। এর জন্য আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জঙ্গিবাদমুক্ত দেশ গড়তে আমরা যেভাবে আন্দোলন করি। ঠিক তেমনিভাবেই মাদকের বিরুদ্ধেও আমাদের আন্দোলন করতে হবে।
এস সি এন অনলাইন : দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
অপু উকিল : বর্তমানের রাজনৈতিক পরিবেশ ভালোই আছে। সব রাজনৈতিক দলই তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেশে আগামীতে একটি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। বিএনপি বিগত নির্বাচনে যে ভুল করেছিল, আগামী নির্বাচন সেই ভুল আর করবে না। আমরা নির্বাচন নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এনটিভি অনলাইন : আপনি কি মনে করেন আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে?
অপু উকিল : রাজনৈতিক দল টিকে থাকে নির্বাচনের মাধ্যমে। অতীতে বিএনপি যে ভুল করেছে, সেটা আর করবে না। আর তাদের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে যে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। আওয়ামী লীগও চায় সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। আরেকটি পজিটিভ দিক হলো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে বিএনপির সরে যাওয়া। নির্বাচনে অংশ নেবে বলেই হয়তো তারা এ দাবি থেকে সরে এসেছে। হয়তো রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার জন্য তারা এখন বিভিন্ন কথা বলছে।
এস সি এন অনলাইন : আপনারা কেন বলছেন, আগামীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে?
অপু উকিল : নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এখন পর্যন্ত বিএনপি এমন কোনো কর্মকাণ্ড করে নাই যে, তারা এখন জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাইবে। হয়তো তারা বলবে আমরা তো (বিএনপি) ক্ষমতায় ছিলাম না যে, জনগণের জন্য কিছু করব। সেই ক্ষেত্রে আমি বলব ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না। কিন্তু সকল দুর্যোগ, দুর্বিপাকে আমরা জনগণের পাশে ছিলাম। আর আন্দোলনও করেছি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে। জনগণ আমাদের সঙ্গে ছিল বলেই বিএনপির আজিজ মার্কা নির্বাচন প্রতিহত করতে পেরেছি আমরা। পানি, বিদ্যুৎ, সারের দাম বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলসহ বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন করেছি। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার কিছুই নেই। তাকে থাকার জন্য রাজধানীর ধানমণ্ডিতে একটা বাড়ি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে তা দখল করে থানা বানিয়ে দিয়েছিল। এটি নিয়ে কিন্তু আমরা আন্দোলন করিনি। আমরা ক্ষমতায় আসার জনগণের দাবি আমরা পূরণ করতে পেরেছি। সার এখন কৃষকের দরজায় পৌঁছে যায়, দেশে পানি, বিদ্যুতের ভোগান্তি নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নেই। ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে কাজ করেছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দেশের জন্য কিছু করে নাই। আবার ক্ষমতায় না থেকেও তারা দেশের জন্য কিছু করে নাই। তারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দেশের মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। জনগণ এই অপকর্ম রুখে দিয়েছে।
অতীতে বিএনপি ভোট পেত ধর্মের নামে অপপ্রচার করে। তারা তখন বলত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশ ভারত হয়ে যাবে, মসজিদে আজানের বদলে উলুধ্বনি হবে।
কিন্তু এখন সেই অপপ্রচার করতে পারবে না। কারণ মানুষ এখন সচেতন। এর মূল কারণ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশে সব তথ্যই পাচ্ছে। কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মসজিদের সংখ্যা বেড়েছে। ধর্মীয় খাতে অনুদান বেড়েছে। তাই তাদের এখন বিভ্রান্ত করা যাবে না। আমরা মনে করি উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্য আগামীতেও জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে।
এস সি এন অনলাইন : রাজনীতি করার বিষয়ে পরিবারের সহযোগিতা পেয়েছিলেন?
অপু উকিল : পরিবার আমাকে রাজনীতি করতে উৎসাহ দিয়েছে। আর বিয়ের পরে শ্বশুরবাড়ির সবাইও আমাকে উৎসাহ দিয়েছে। আমার হাজব্যান্ড তো আছেই, বিশেষ করে আমার শাশুড়ি আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন। একটা ঘটনা না বললেই নয়, ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রদল হামলা করেছিল। তাদের হল থেকে বের করে দিয়েছিল। এসব ঘটনার মীমাংসা করার জন্য আমরা ইডেন কলেজে গেলে তারা আমাদের ওপরও হামলা চালায়।
আমাদের নামে মামলা দেয়। গ্রেপ্তার এড়াতে আমরা আত্মগোপন করি। পত্রিকায় অনেক লেখালেখিও হয়েছে। গ্রামের কয়েকজন এসব পত্রিকা জোগাড় করে আমার মায়ের কাছে বলল, দেখেন মেয়েকে ঢাকায় পাঠিয়েছেন পড়াশোনা করার জন্য কিন্তু সে তা না করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে। তখন তাদের আমার মা বলেছিলেন, আমার মেয়ে আন্দোলন করছে। সে স্বৈরাচার পতন আন্দোলন করেছে এবং সফল হয়েছে। এখন আবার এ সরকারের পতনের জন্য আন্দোলন করছে, এটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড না। পত্রিকায় এসব লেখালেখি যত হবে, তাদের পতন তত তাড়াতাড়ি হবে।
এস সি এন অনলাইন : আত্মীয়রা কীভাবে দেখতেন আপনার রাজনীতিতে আসার বিষয়টাকে?
অপু উকিল : আমার আত্মীয়স্বজনদের সবাই আওয়ামী লীগ করেন। তাঁরাও আমাকে রাজনীতি করার জন্য প্রেরণা দেন। তাঁরা আমাকে সহযোগিতা করেন এবং সাহস দেন। তাঁরা বলেন, আমাদের মধ্যে যে তুমি রাজনীতি কর সেটাই আমাদের পরম পাওয়া এবং আমরা গর্ব করি।
এস সি এন অনলাইন : আপনি তো সংসদ সদস্য ছিলেন।
অপু উকিল : প্রধানমন্ত্রী আমাকে বিগত জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বানিয়েছিলেন। এ জন্য আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমার স্বামী আমার রাজনৈতিক নেতা। তিনি রাজনীতিতে এগিয়ে যাবেন এটাই আমার চাওয়া। আমার স্বামী এবার সংসদ নির্বাচন করবেন- এটাই আমার চাওয়া। রাজনীতিবিদ সংসদ সদস্য হলে জনগণের কল্যাণ বেশি বেশি করা যায়। তিনি জনগণের নেতা। সৎ, যোগ্য নেতা হিসেবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন পাবেন বলে আমি আশা করি। এর মাধ্যমে তিনি তাঁর রাজনীতির স্বীকৃতি পাবেন বলে আমি মনে করি।