Breaking News

চাঁদপুর হানারচরে মানবতা নেই হচ্ছে লুটৎরাজ

চাঁদপুর হানারচরে মানবতা নেই হচ্ছে লুটৎরাজ

বিশেষ প্রতিনিধি

চাঁদপুর সদরের হানারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের যোগসাজশে অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির প্রকল্পের ২য় কিস্তির কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এ কর্মসূচির আওতায় ১শ’৭১ জন শ্রমিকের মুজুরি ওয়েজ কষ্ট বাবদ ১৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ও নন-ওয়েজ কষ্ট বাবদ ৭২ হাজার ৭শ’২৯ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
বরাদ্দকৃত এ অর্থ ৭টি প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যয় করা হয়েছে। প্রকল্প গুলো হলো : হরিণা বাজার হতে সাপলেজা সপ্রাবি হয়ে ওয়াপদা রাস্তা পর্যন্ত রাস্তা মেরামত বাবদ ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা। উপকার ভোগী শ্রমিকের সংখ্যা ২৮ জন।
বেড়ি বাঁধ হতে দুলাল দাসের বাড়ি হয়ে আলী আরশ্বাদ মিজির বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা। উপকার ভোগী শ্রমিকের সংখ্যা ২৮ জন।
ওয়াপদা রাস্তা হতে ইব্রাহীম মাঝির বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা। উপকার ভোগী শ্রমিকের সংখ্যা ২৮ জন। পাকা রাস্তা হতে নুরু মেজরের বাড়ি হয়ে পুরাতন ওয়াপদা রাস্তা পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ব্যয় ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা। উপকার ভোগী শ্রমিকের সংখ্যা ২৮ জন।
ওয়াপদা রাস্তা হতে ইউনিয়ন পরিষদের পাশে গাইড ওয়ালের গর্ত ভরাট ও মাঠ সংস্কার এবং ওয়াপদা রাস্তা হতে মমিন গাজীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ব্যয় ২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। উপকার ভোগী শ্রমিকের সংখ্যা ৩৪ জন।
ওয়াপদা রাস্তা হতে মনসুর শেখের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ব্যয় ২ লাখ টাকা। উপকার ভোগী শ্রমিকের সংখ্যা ২৫ জন। নুরু মেজরের বাড়ির পাশে গাইড ওয়াল নির্মাণ (নন-ওয়েজ প্রকল্প বাবদ) বরাদ্দ ৭২ হাজার ৭’শ’ ২৯ টাকা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়- ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশের রাস্তাটির গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হলেও পরিষদের মাঠে বিন্দু মাত্র মাটি ফেলা হয়নি। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা হলে তিনি সঠিক কোনো উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।
অপরদিকে ওয়াপদা রাস্তা হতে মনসুর শেখের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি মেরামতের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। রাস্তাটি মেরামতের জন্য মাটি ধরা ছিলো ৩৫ হাজার ঘনফুট। এ কাজে তালিকাভূক্ত উপকার ভোগীর সংখ্যা ছিলো ২৫ জন।
স্থানীয়রা জানায় , রাস্তাটির পাশ থেকে ক’জন শ্রমিক দিয়ে সামান্য কিছু মাটি কেটে এটি কোনো রকম মেরামত করে দেয়া হয়েছে। ১০-১৫ দিন যেতে না যেতে রাস্তাটির মাটি ধেবে গিয়ে আগের মতই সরু হয়ে যায়।
বিষয়টি এ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান মহিলা ইউপি সদস্য রাশিদা বেগমকে অবহিত করা হলে তিনি বলেন, ‘ আমি কিছু বলতে পারব না । চেয়ারম্যান সাহেব বলতে পারবে ওনি আমাকে যেভাবে মেরামত করতে বলেছে আমি ওনার কথা মত কাজ করিয়েছি।’
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়- ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি হাজ্বী আব্দুস ছাত্তার ঢ়াড়ী ৬ টি প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের জন্যে উপকার ভোগী শ্রমিকের তালিকায় যাদের নাম রেখেছে তাদের অনেকেই জানেন না তালিকায় তাদের নাম রয়েছে।
শুধু তাইনয়, প্রত্যেকটি কাজে তালিকা ভূক্ত ক’জন উপকার ভোগী শ্রমিকের সাথে চেয়ারম্যানের পছন্দের লোক দিয়ে মেরামত কাজ করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষে ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই উপকার ভোগীদের সনাক্তকারী হয়ে ব্যাংক থেকে পুরু টাকা উত্তোলন করে নেন।
চেয়ারম্যানের এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সবক’টি প্রকল্পের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যগণ অপমান-অপদস্থ হয়ে তারা সবাই চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষুব্ধ।
ক’জন ইউপি সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে কোনো উন্নয়ন কাজ তিনি তার লোক দিয়ে নিজের ইচেছ মতো করিয়ে থাকেন। সরকারি বিভিন্ন দান-অনুদান নিজের পছন্দের লোকদের বরাদ্দ দিয়ে থাকেন।
আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দিয়ে সদস্য পদ বাতিল করে দেবার হুমকি দেন। এ সব অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আবদুস সাত্তারের সাথে কথা হলে তিনি অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘স্থানীয় একটিমহল আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অপ-প্রচার চালাচেছ।’
অপরদিকে ভোক্ত ভোগীদের দাবি, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কাজের অনিয়মের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD