বিএনপি-জামায়াতের নৃশংসতার বলি অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী
নিউজ ডেক্স।
২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর, বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতা নেওয়ার মাত্র দেড় মাসের মাথায় খুন হন চট্টগ্রামের নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী। অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে নাজিরহাট কলেজের হারানো গৌরব ফেরানো, দুর্নীতি বন্ধ ও মৌলবাদী রাজনীতির উৎখাতই কাল হয়েছিল তার জীবনে। গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীর নারকীয় হত্যাকাণ্ডে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত নেতারা জড়িত ছিলেন। নৃশংস এই হত্যার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।
২০০১ সালের কারচুপির নির্বাচনে জয়ী হয়েই গুম, খুন ও অরাজকতার রাজনীতিতে মেতে ওঠে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। রাষ্ট্রীয় মদদে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বেছে বেছে হত্যা করা হয়। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল দেশের সাধারণ মানুষ। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে বিরোধী মতের মানুষদের হত্যা করাটা বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক দর্শনে পরিণত হয়। চট্টগ্রামের গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে চট্টগ্রামের ত্রাসের রাজনীতির বিস্তার ঘটায় জোট সরকার। গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যাকাণ্ডটি সারাদেশে সাড়া ফেলে। এমন বর্বর হত্যাকাণ্ডে মানুষ স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিল। বিরোধী দল ও মতের মানুষদের দমনে বিএনপি-জামায়াতের নৃশংসতায় দেশের মানুষ হতবাক হয়ে যায়।
সূত্র জানায়, ফটিকছড়ির নাজিরহাট কলেজ থেকে পুরো চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করতো শিবির ক্যাডার নাছির। তার অনুসারী ও কলেজের মৌলবাদী এবং দুর্নীতিবাজ কিছু শিক্ষক-কর্মচারী মিলে এ কলেজের বিপুল পরিমাণ সম্পদ লুটেপুটে খেতো। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য হতো এখানে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে প্রগতিশীল শিক্ষাবিদ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি কঠোরভাবে প্রশাসন পরিচালনা করেন। সবধরনের অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করে দেন। শিবির ক্যাডার নাছিরকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেন। কলেজের প্রগতিশীল ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মৌলবাদী চক্রটি। গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তারা। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়ার সঙ্গেই সঙ্গেই হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে তারা।