শাহরাস্তিতে প্রবাসী শফিকের বৌ-বৌ খেলা! নির্যাতনের শিকার প্রথম স্ত্রী
হাসানুজ্জামানঃ শাহরাস্তি
চাঁদপুুর জেলার শাহরাস্তিতে প্রবাসী শফিকের বৌ-বৌ খেলার শিকার হয়ে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনে অতিষ্ঠ প্রথম স্ত্রী ছকিনা।
ঘটনাটি উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামে ঘটেছে।
জানা যায়, প্রবাস থেকে আসা স্বামী শফিকের এখন অনেক টাকা। টাকার গরমে সে আরেক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার জের ধরে বিয়ে করে। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই চলছে প্রথম স্ত্রীর উপর অমানবিক নির্যাতন।
কাবিন নামা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিগত ২ এপ্রিল-২০০৭ইং তারিখে ওই গ্রামের বেপারী বাড়ির আবদুল জলিল বেপারীর প্রতিবন্ধী (বাক্ প্রতিবন্ধী) কন্যার (৩৩) সাথে শরা-শরীয়ত মতে একই গ্রামের গোলাপ রহমানের পুত্র শফিকুল ইসলাম’র (৩৯) বিয়ে হয়। গোলাপ রহমানের পরিবার অত্যান্ত গরীব ও অসহায় বিধায় কন্যা পরিবার শফিককে তাদের অর্থায়নে প্রবাসে পাঠায়। এরই মধ্যে তাদের সংসার জুড়ে আসে একমাত্র ছেলে সিয়াম (১২)।
এবিষয়ে প্রতিবন্ধী কন্যার পিতা আবদুল
জলিল বলেন, আমি আমার বোবা মেয়েটাকে শফিকের কাছে বিয়ে দিয়ে তাদের পরিবারটিকে আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করেছি। এখন শফিক অনেক টাকার মালিক হয়ে আমার মেয়েকে অত্যাচার নির্যাতন করছে। সে এখন আরেক প্রবাসী হারুনের স্ত্রী ফেরদৌসকে বিয়ে করেছে। তার চোখে এখন রঙ্গিন চশমা। আমি অপারগ হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে মেয়েকে শফিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছি। দীর্ঘ ১২ বছর পর দেশে ফিরে সে এখন তার দ্বিতীয় স্ত্রী ফেরদৌসিকে নিয়ে নতুন সংসার করছে। এবিষয়ে স্থানিয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। কিন্তু শফিক স্থানিয় লোকজনকে তোয়াক্কা করেনা। কারন এখন তার অনেক টাকা। বিয়ের দিন সে এবং অভিভাবকগন কিছু শর্ত স্বাপেক্ষে স্থানিয় স্বাক্ষীদের সামনে লিখিত ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে আমার মেয়েকে শফিক বিয়ে করে। বিয়ের এক বছর পরে তাকে আমি প্রবাসে পাঠাই। সে ১২ বছর পর দেশে ফিরে আসে। দেশে এসে ফেরদৌসিকে বিয়ে করে। তার পিতা গোলাপ রহমানকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি জানান, “এসব আমি জানিনা। ছেলে যদি বিয়ে করে তাহলে এটা তার নিজস্ব ব্যাপার। আপনার মেয়েকে তো আর তালাক দেয়নি। আপনার মেয়ে তার জায়গায়ই থাকুক”। শফিক প্রায়ই আমার মেয়েকে মারধর করতো। বিষয়টি তার পরিবারের সবাই জানতো। আমি অপারগ হয়ে থানায় ৫ জনকে বিবাদী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। তিনি এমন স্বার্থপর ব্যক্তিকে আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এব্যাপারে শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি তাদের সহযোগিতায় প্রবাসে গিয়েছি। কিন্তু তাদের মেয়েকে কখনও কষ্ট দেইনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ফেরদৌসিকে বিয়ে করেছি এটা সত্য। আমি তাদের মেয়েকে চলে যেতে বলিনি। আমার তৌফিক অনুযায়ী উভয় স্ত্রীকে পরিচালনা করবো। প্রথম স্ত্রী বোবা থাকার কারনে আমি আবারও বিয়ে করি।
এলাকাবাসী বলেন, গোলাপ রহমান তার অভাবগ্রস্ত পরিবারকে তুলতেই জলিল বেপারীর মেয়েকে তার ছেলের বৌ করে বাড়ি নেয়। জলিল বেপারী গোলাপ রহমানের সকল শর্তপূরণ করে শফিকের কাছে তার মেয়েকে বিয়ে দেন। বর্তমানে শফিকের দ্বিতীয় বিয়ে করার অপরাধকে ছোট করে না দেখে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার জোর দাবি জানান তারা।