হাইমচরে লাইজু হত্যার বিচারের দাবিতে নারি পুরুষের প্রতিবাদ
হাইমচর প্রতিনিধি
মোবাইলে রং নাম্বারে পরিচয় তারপর গভীর প্রেম, বাবা মার অমতে পালিয়ে গিয়ে সাত মাস পূর্বে লাইজু আক্তার(১৭) নামে এক হতভাগা কিশোরী হাইমচর উত্তর আলগি ইউনিয়নের জিয়া চকিদার নামে এক বখাটের সাথে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন শুরু করে। মেয়ের সুখের আশায় তার পরিবার দুই দফা যৌতুক দেওয়ার পরেও পুনরায় টাকা পাওয়ার আশায় যুবতীকে আবারো নির্যাতন শুরু করে।
অবশেষে শেষ রক্ষা হল না মঙ্গলবার বিকেলে গৃহবধূ লাইজু আক্তারকে হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
নিহত লাইজু বেগম(২২) ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১০ নং গোবিন্দপুর ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম লাড়ুয়া গ্রামের বিল্লাল মিজি মেয়ে।
গৃহবধূর মৃতদেহ পুলিশ হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করেন।
যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মুখে বিষ ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের স্বজনরা।
বুধবার বিকেলে শত শত মানুষ একত্রিত হয়ে হত্যাকারীকে অতি দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেন ও তীব্র প্রতিবাদ জানান।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা বিল্লাল মিজি জানান, হাইমচর ২ নং উত্তর আলগি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড মধ্যম কমলাপুর চৌকিদার বাড়ি নজিব চৌকিদারের ছেলে ট্রাক্টর চালক জিয়া চকিদার (২৫) লাইজু আক্তার কে সাত মাস পূর্বে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে বিয়ে করে। তারপর থেকেই যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন শুরু করে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয় পরে দেড় লক্ষ টাকার যৌতুক দেওয়া হয়। কিন্তু বখাটে জিয়া চকিদার সেই টাকা দিয়ে জুয়া খেলে নষ্ট করে দেয় তারপর আবারও যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
জুয়া খেলে টাকা নষ্ট করার কারণে মেয়ে বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করলে অবশেষে লাইজু আক্তারকে হত্যা করে লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়। আমরা এই হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানায়।
এ ঘটনায় হাইমচর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান মোল্লা জানান, গৃহবধূর লাশ হাসপাতাল থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করা সম্ভব হবে এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা থানায় দায়ের করা হয়েছে। যদি নিহতের পরিবার হত্যার প্ররোচনায় থানায় অভিযোগ করে তাহলে মামলা হবে।
এদিকে এ ঘটনার পর বখাটে জিয়া চকিদার ও তাদের পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে।
এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার শাহাজাহান ঘটনাটি ছেলের পক্ষ নিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পরিবারের পক্ষ থেকে হাইমচর থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।