)গ্রাম পুলিশের গল্প । অমিত পর্ব পাচের শেষ
সিলেট প্রতিনিধি
হইচই ,কান্নার রোল শুনে ওসি sir এসে অমিত কে শান্তনা দিলেন।এবং একটি গাড়িতে অমিত কে বাড়িতে পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন।একজন বাবা হিসেবে অমিত আজ তার মেয়ে কে একটি চকলেট দিতে পারলো না , ওসি sir , অমিত কে বিদায় দেওয়ার পরে অনেক সময় ভাবলেন।আসলেই তো এরা ও আমাদের মতো কাজ করে যাচ্ছে, এরা ও আমাদের ভাই, কিন্তু কেনো এদের কে এতো অবহেলিত ভাবে চলতে হচ্ছে ।ওসি ফয়েজ সাহেব উনার প্রাইভেট নোট বই বের করে কথা লিখে রাখলেন।আর এ কথা ভাবলেন যে কথা টা সত্য এবং কষ্ট দায়ক, নিশ্চয়ই এটি উপর মহলে জানাতে হবে।
অমিত প্রায় বাড়ির পাশে এসে পৌছে গেলো, কান্নার রোল শুনে তার বুকের ভেতরে দুঃখের সৃতি গোলো আরো বেশি আসছে।ঘরে ঢুকতেই মেয়ে কে মৃত্যু অবস্থায় দেখে অমিত নিজেকে ঠিক না রাখতে পেরে,মাটিতেই লুটে পড়ে কাঁদতে শুরু করলো।ভার ভার অমিত নিজে কে একজন কর্ম হীন বাবা বলে ভাবছে।এদিকে বিকাল চারটা বেজে গেলো, গ্রামের প্রতিবেশি সবাই এসে অমিত ,রত্না ,এবং অমিতের বড় মেয়ে তৃষ্ণার দেবির কান্নার আহাজারি দেখে শান্ত না দিতে লাগলেন।এবং জুলি কে সমাধি করার ব্যবস্থা করছেন সবাই।হটাৎ অমিতের ফোন বাজলো, ওয়ার্ডের মেম্বার সাহেব কল করছেন।কে যেনো ফোন রিছিব করছে, মেম্বার:অমিত তুই কোথায়,রজনী পুর গ্রামে একটি মেয়ে বিষ খেয়ে মারা গেছে অতি তারাতারি ঐ খানে যা।;;আপনী কে বলছেন,
মেম্বার:আমি মেম্বার সাহেব ।
,,ও তাই নাকি,অমিতের মেয়ে আজ মারা গেছে, ও এখন কথা বলতে পারছে না, আপনি অন্য একজন গ্রাম পুলিশ কে বলেন প্লিজ ।
মেম্বার:ও ছড়ি
হটাৎ একজন মুরববী এসে বললেন, জুলি কে বাহির করতে হবে।এ কথা শুনে অমিতের মাতায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।মা জুলি বাবাকে অভিশাপ দিছ না, আমি তো এই দেশের সরকারের কাজ করছি, আমি একজন সরকারী কর্ম চারি ।মালিক আমাকে যা বেতন দিচ্ছে তা দিয়ে তোর চকলেটের টাকা হচ্ছে না।এটা আমার কি দুষ,এটা তোর নিজের কপালে লেখা, কেনো জন্ম নিলে একজন গ্রাম পুলিশের ঘরে।তুই ঈশ্বরের কাছে গিয়ে বলবি,আমার মতো সরকারী পোশাক পরিহিতো গ্রাম পুলিশের ঘরে যেনো তোর মতো জুলির আর জন্ম না দেয়।আমি ক্ষমা চাই মা জুলি, আমাকে ক্ষমা করে দিছ। সমাধির সময় হয়ে গেছে সবাই জুলি কে এসে মা বাবার হাত থেকে নিয়ে গেছেন।এ দিকে রত্না মাটি তে লুটে পড়ে কাঁদছে, হে ঈশ্বর, জুলি আমাদের কাছে থেকে নিয়েছো, এটা আপনার সুন্দর, তবে আমরা ওর মা বাবা হয়ে ও সকাল বেলা এক মুঠো ভাত অতো পর একটা চকলেট দেওয়ার উপযোগী কেনো আমরা হলাম না এর বিচার আপনার ঠিক হয় নাই।এজন্য ঈশ্বর আপনি দায়ি থাকবেন, নতুবা কেনো আমরা একটি ছোট মেয়ে কে সকাল বেলা এ মোঠো ভাত দিতে পারলাম না, কেনো ওর বাবা রাতে ঘরে ফিরতে ভয় পায় জুলি র চকলেট দেওয়ার ভয়।
সমাধি শেষ, সবাই অমিতের পরিবারের সকলকে শান্ত না দিয়ে যার যার বাড়িতে চলে গেলেন। সন্ধ্যা গরিয়ে রাত হয়ে গেছে।এদিকে হটাৎ একটা গাড়ি অমিতের বাড়ি র পাশে এসে থামলো ।কে যেনো অমিত বলে ডাকছে, চোখে জল, ক্লান্ত শরীরে বাহির হলো অমিত ও রত্না দেখলো পুলিশের গাড়ি ।অমিত ওসি সাহেব ও আরো কয়েক জন কনসেটবল দেখে চমকিতো হলো।ওসি সাহেব পাশে আসতেই অমিত সেলুট দিয়ে দাড়ালো,
ওসি: অমিত, রত্না দুঃখ করোনা, সৃষ্টি কর্তা যা করেন মঙ্গলের জন্য করেন, এটাই বিধির লিখন ।আমি উপর মহলে তোমার বিস্তারিত জানিয়েছি।আজ তোমার এ সব কষ্টের দিক দেখে আমি ও ঠিক থাকতে পারছি না।যাই হোক অমিত , তুমি ও আমাদের একজন সদস্য, আমরা পুলিশ, তুমি গ্রাম পুলিশ ।কিন্তু কেনো আজ তোমার এতো কষ্টের জিবন ।যা মেনে নেওয়ার মতো নয়, নিশ্চয়ই সরকার তোমরা গ্রাম পুলিশের কথা ভাববে।
অমিত: আশীর্বাদ করবেন sir.আমার মেয়ে টা যেনো পরকালে মুক্তি পায়।
ওসি সাহেব দুইজন পুলিশ সদস্য দিয়ে গাড়ি থেকে কি আনতে বললেন ।
এক বস্তা চাউল, এবং যাবতীয় কিছু খরচ।
ওসি:অমিত আমার পক্ষ থেকে কিছু সাহায্য তোমাকে দিলাম।আর এই নও এক হাজার টাকা , মেয়েটির শ্রাদ্ধ কাজে লাগিও।আমরা চলে গেলাম।;;
অমিত সেলুট জানিয়ে ওসি সাহেব কে বিদায় দিলেন।এবং মনে মনে ঈশ্বরের কাছে পার্থনা করছে, ঈশ্বর এ রকম ওসি সাহেব যেনো বাংলাদেশের প্রতি থানায় একজন করে হয়।
ধারাবাহিক গল্পের আজ শেষ পর্ব