এমপির সামনেই উপজেলা চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে আহত
পটুয়াখালী প্রতিনিধি
পটুয়াখালী: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপনকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত অর্ধশত।
উপজেলা পরিষদের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে, তবে সেখানে গাড়ির মধ্যে ছিলেন সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ।
জানা যায় শুক্রবার (১৭ মার্চ) বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদারের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ শুরু হয়,
সংঘর্ষের সময় পুলিশ সদস্য ও আ স ম ফিরোজের সামনেই উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে কুপিয়ে আহত করেন হামলাকারীরা।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা এ এস এম সায়েম গণমাধ্যমকে বলেন, আবদুল মোতালেবের ডান হাতের তৃতীয় আঙুল কেটে গেছে। সেটি শুধূ চামড়ার সঙ্গে ঝুলে আছে। এছাড়া তার বুকের ডান পাশে ও ডান হাতের কনুইয়ে জখম হয়েছে। তার পা ও মাথায় আঘাত লেগেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আবদুল মোতালেবকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, একই সময়ে তিনটি পক্ষ কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর মধ্যে আ স ম ফিরোজ এবং আবদুল মোতালেব হাওলাদারের পক্ষের কর্মসূচি উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে (জনতা ভবন) এবং বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউল হক ওরফে জুয়েলের পক্ষের কর্মসূচি বাউফল প্রেসক্লাব সড়কের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগ আরেকাংশের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
কর্মসূচিস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে কর্মসূচিস্থলে জড়ো হচ্ছিলেন নেতাকর্মীরা। বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হকের পক্ষের সমর্থকরা বাউফল সরকারি মাঠে, আ স ম ফিরোজের পক্ষের সমর্থকেরা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ও আবদুল মোতালেবের পক্ষের সমর্থকেরা বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হচ্ছিলেন।
আবদুল মোতালেবের নেতৃত্বে বেলা ১১টার দিকে আনন্দ র্যালি নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের (জনতা ভবন) দিকে যাচ্ছিলেন নেতাকর্মীরা। বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছালে সংঘর্ষ এড়াতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল আমিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাদের বাধা দেয়। তখন পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে আবদুল মোতালেবের কথা–কাটাকাটি হয়। অপর পাশেই লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছিলেন আ স ম ফিরোজের সমর্থকরা। তখন আ স ম ফিরোজ ছাদখোলা একটি গাড়িতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে পুলিশের সামনেই ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলা করেন। হামলা থামাতে গিয়ে আবদুল মোতালেবের কয়েকজন কর্মী আহত হন, আহতরা হলো রাব্বি (৩০), মো. হাসান (২৬), মো. হাসিব (৩২), মো. খোকা মিয়াসহ (৫০) অন্তত ১০ জন আহত হন।
পরে আবদুল মোতালেবের সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এতে ওসি আল মামুন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) এম এ হাসান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. হুমায়ন কবির ও মো. শাহিন, কনস্টেবল মো. আবু রাহাত ও মো. রবিউলসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হবার কথা জানা গেছে।
আহত ওসি আল মামুন বলেন, ইটপাটকেল নিক্ষেপে তিনিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা ২০টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান নিজ দলের প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়েছেন। তবে বর্তমানে পরিবেশ শান্ত আছে।